Tuesday, January 4, 2011

প্রজাপতি ডলার আনে

প্রজাপতি ডলার আনে
আলতাফ হোসেন লাভলু

প্রজাপতি পাখায় পাখায় এ কোন মায়ার রং ছড়ায়। বোধ করি কবিরা ফল ও পাখির পরই প্রজাপতিকে নিয়ে বেশি চর্চা করেছেন। অবশ্য প্রজাপতির সৌন্দর্যই এর মূল কারণ। এ উপমহাদেশে প্রজাপতির আধিক্য রয়েছে বলে বিজ্ঞানীদের অভিমত। বিশেষ করে প্রাকৃতিক কারণে নেপালে পোকামাকড় সেই সঙ্গে প্রজাপতিরও জন্মের হার বেশি। হিমালয়ের কোল ঘেঁষে এ সুন্দর দেশটিতে মোট ৬০০ প্রজাতির প্রজাপতি রয়েছে। কাঠমু-ুর বিভিন্ন উপত্যকায় উড়ে বেড়ানো হাজার হাজার প্রজাপতিই বিশ্বের পর্যটকদের টেনে আনে এখানে। গোদাবরী, ফুলচকী ও নার্গাজন উপত্যকায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সেই সঙ্গে চিকচিকে রোদেলা বিকেলে রঙবেরঙের প্রজাপতি এ দেশটিকে বছরে প্রচুর পরিমাণে ডলার অর্জনের সুযোগ করে দেয়। তবে দুঃখের বিষয় এসব নিরীহ সুন্দর প্রাণীরাও শিকারি মানুষের পাল্লায় পড়ে বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যদিও এদেশে ব্যবসায়িকভাবে প্রজাপতি ধরা নিষিদ্ধ। প্রজাপতি কি খায়? আসলে প্রজাপতির জীবনে চারটি ভাগ। প্রথম হলো ডিম। দ্বিতীয় শুঁয়োপোকা। তৃতীয় গুটিপোকা। এই অবস্থায় সারা শীতকাল ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেয়। চতুর্থ অবস্থা হলো সুন্দর প্রজাপতি। দ্বিতীয়ত শুয়োপোকা থাকা অবস্থায় যতটা পারে খেয়ে নেয়। অনেক প্রজাপতি আছে যারা শুধু এই একবারই খেয়ে থাকে শুঁয়োপোকা থাকা অবস্থায়। খেতে খেতে ফুলে ফেঁপে ওঠে। বাইরের চামড়াটা ফেটে গিয়ে নতুন প্রজাপতি বেরিয়ে পড়ে। এই ফাটার কাজ বার বার হতে পারে। ফলে ডিম্বাবস্থায় যে আকার থাকে, তার চেয়ে অনেকগুণ বড় হয়ে যায়। প্রজাপতির শরীরে তিনিটি প্রধান অংশ থাকে মাথা, বুক ও পেট, যেসব প্রজাপতি খালি খেয়েই খাকে, তাদের মুখের বদলে একটা পাইপ থাকে। যখন ব্যবহার হয় না তখন গাড়ির স্প্রিংয়ের মতো এই পাইপটা পাকানো থাকে। ফুলে মধু চুষে খাবার জন্য এই নলকে বেশ কিছুদূর পর্যন্ত পাঠিয়ে দিতে পারে। মথ জাতীয় প্রজাপতিদের পাইপ ৬ থেকে ১২ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। কারুর ওপর করাতের মতো পাইপ হয়। ফলটাকে ফেটে তার ভেতরে থেকে চুষে নেয়। এই পাইপটাকে বলা হয় অ্যানটেনা। এই অ্যানটেনার সাহায্যে প্রজাপতিরা তিনটা কাজ করে- অনুভব, গন্ধ শোকে, এবং শ্রবণ করে। পৃথিবীর নানা দেশে বর্ণালী ও বিচিত্র রঙের আকর্ষণীয় প্রজাপতি বাস করে। নানা প্রজাপতির এ প্রজাপতি দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি আকর্ষণীয়। তাই পর্যটকদের করে আকর্ষণ। জাপানির এক নাগরিক প্রজাপতি চুরি করতে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কার অভয়ারণ্যে। প্রহরীর চোখ এড়িয়ে যখন ৩২টি প্রজাপতি নিয়ে পালাচ্ছিলেন তখন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তাদের হাতে ধরা পড়ে। আদালতে তাকে চালান দেওয়ার পর যতœপুর শহরের ম্যাজিস্ট্রেট অজ্ঞাতনামা ও জাপানিকে দু’সপ্তাহে কারাগারে রাখার নির্দেশ দেন। সন্ধান পাওয়া তথ্যমতে অসংখ্য প্রজাপতির মধ্যে সবচেয়ে বড় আকৃতির প্রজাপতির নাম ‘ট্রয়েডস ভিক্টোরিয়া’। এ প্রজাপতির পুরুষদের অতিকায় দু’ডানার মাপ ১২ ইঞ্চিরও বেশি। আর ওজন ৫ গ্রামেরও বেশি। এটি পাওয়া গেছে দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সলোমান দ্বীপপুঞ্জে।

No comments:

Post a Comment